রিমান্ডে নেওয়া বিপ্লব ও হীরার দেওয়া সূত্র ধরেই তদন্ত কাজ এগুচ্ছে, হোশির মরদেহ নেয়নি জাপানি প্রতিনিধি দল

হাজী মারুফ রংপুর অফিস :

জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যাকান্ডের ঘটনায় জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি দল রংপুরে এলেও হোশির মরদেহ গ্রহণ করেননি তারা। মঙ্গলবার রাতে চার সদস্যের জাপানি প্রতিনিধি দল ফরেনসিক বিভাগের মর্গে যান।
সেখানে দেড় ঘণ্টা পর্যবেণ শেষে বেরিয়ে গেলেও মরদেহ হস্তান্তেরের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। এসময় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্য ডা. জাকির হোসেন, ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মর্গ থেকে বেরিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্য ডা. জাকির হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল আল ফারুক মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি পরে সাংবাদিকদের জানানো হবে।
এর আগে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে রাত সাড়ে আটটায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে হোসির মরদেহ পর্যবেণের জন্য আসেন জাপানের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।
তারা প্রায় দুই ঘণ্টা মর্গের হিমঘরে মরদেহের পর্যবেণ এবং বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ ও আলামত সংগ্রহ করেন। বুধবার দুপুরে  পৌনে ১২ টার দিকে কঠোর  গোপনিয়তার মধ্য দিয়ে জাপান দূতাবাসের চীফ সিকিউরিটি অফিসার কিনজু এবং তার সহকারী দোভাষী আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে জাপানের প্রতিনিধিদলটি প্রথমে রংপুর পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে তারা  সেখান  থেকে  বেরিয়ে আদালত প্রাঙ্গনে  জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আব্দুল মালেকের রুমে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। বৈঠক  শেষে তারা গণমাধ্যমের সামনে কোন কথা বলেন নি। তবে পিপি আব্দুল মালেক সাংবাদিকদের জানান,  কোনিও হোসি মামলার বিভিন্ন বিষয় এবং আইন সম্পর্কে প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনা হয়েছে। জাপানি নাগরিক কোনিও হোসির হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাশেদ উন নবী খান বিপ্লবকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার স্ত্রী শিরিন আখতার দীপা। তিনি বলেছেন, তার স্বামী অসুস্থ। রাজনীতিতে সক্রিয় নন। কোনিও হত্যাকান্ডের সঙ্গে তার স্বামীর কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে বিএনপি বিপ্লবকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এর মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
বিপবের স্ত্রী শিরিন আখতার দীপা সাংবাদিকদের বলেন,  “কোনিও হোসি হত্যা মামলায়  আমার স্বামীকে গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নেয়ার ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন। আমার স্বামীর সঙ্গে ওই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার ও আমার স্বামীর সঙ্গে হীরারও কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদেও দুজনের মোবাইল চেক করলেও সেটি স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
দীপা বলেন, “আমার স্বামী পার্টিতে সেভাবে সক্রিয় নন। আমার স্বামী অসুস্থ। তিনি মিলেনিয়াম স্টারে আমার মেয়েকে আনা-নেয়া ছাড়া বাকি সময়টা বাড়িতে শুইয়ে কাটান। হীরার সঙ্গেও আমার স্বামীর কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যায়ভাবে আমার স্বামীকে এই মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আমি আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করি।”
রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন বলেন, “বিপব বিএনপি পরিবারের সন্তান হলেও তিনি রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় ছিলেন না। কিš‘ তাকে প্রধানমন্ত্রীর কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্থানীয় প্রশাসন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ড দেখিয়েছে। এটা ন্যাক্কারজনক। এর মাধ্যমে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।” তিনি  বিদেশী নাগরিক হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের মুখোমুখি আনা ও  বিপবের নিশর্ত মুক্তি দাবি করেন। 
রংপুরে জাপানি নাগরিক কোনিও হোসি হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের ছোট ভাই রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য রাশেদ উন নবী খান বিপব এবং কোনিওর বন্ধু হুমায়ুন কবির হীরাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর মহানগরীর উপকণ্ঠ কাউনিয়ার কাচু আলুটারী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন হোসি। ওই সময় গ্রেফতার করা হয় ভাড়াবাসার মালিক জাকারিয়া বালা, ব্যবসায়িক বন্ধু হুমায়ুন কবির হিরা, তার শ্যালক তিতাস, রিকশা চালক মোন্নাফ ও ঘটনাস্থলের পাশের বাড়ির মালিকের ছোট ভাই মুরাদকে। এর মধ্যে শুধু হীরাকে গ্রেফতার দেখানো হলো ওই মামলায়।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 2646914189365717728

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item