ক্যুচক্রী মহলের দাপট সৈয়দপুরে এক পরিবারের বাড়ি ঘর ও দোকান ভেঙ্গে উচ্ছেদ
https://www.obolokon24.com/2015/09/saidpur_39.html
আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি,স্টাফ রিপোর্টারঃ
একটি ক্যুচক্রী মহলের দৃষ্টি কত খারাপ হতে পারে তা হারে হারে টের পাচ্ছে খুপড়ি ঘরের চা-পান বিক্রেতা অসহায় হায়দার আলী। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যাক্ত একখন্ড জমির উপর তার এই দোকানঘর ও বৃদ্ধা মা সহ পরিবার নিয়ে বসবাস ছিল। এখান থেকে উচ্ছেদ করতে ক্যুচক্রী মহলটি দল বেঁেধ সৈয়দপুর থানায় ওই হায়দার আলীকে মাদক বিক্রিতা আখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেফতারের জন্য একটি পিটিশন দাখিল করেছিল। পুলিশ তদন্তে এই অভিযোগ মিথ্যে প্রমানিত হয়। ক্যুচক্রী মহলটি এখানে ব্যর্থ হয়ে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নেয়। এবার তারা কৌশলে হায়দার আলীর স্ত্রী ও ১৪ বছরের মেয়েকে দেহ ব্যবসার অপবাদ ছড়িয়ে লাঠিসোডা নিয়ে হামলা চালায় হায়দার আলীর দোকান ও বসবাসের খুপড়ি ঘরে। ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করে দেয়। ক্যৃ-চক্রী মহলের ওই উচ্ছেদ অভিযানের সময় থেকে নিখোঁজ হয় হায়দার আলীর ১৪ বছরের মেয়ে কাকলি। তাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদিকে ক্যু-চক্রী মহলের হাতে জিম্মি এলাকাবাসী কেউ সাহস করে এর প্রতিবাদে ব্যর্থ হলেও হায়দার আলীকে পানি উন্নয়ন বোডের একটি পরিত্যাক্ত ভবনে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। সেখানে হায়দার আলীর বৃদ্ধা মা জোছনা বেগম অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় তাঁকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকার সাধারন মানুষজন সোমবার অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানালো গত ৯ সেপ্টেম্বর দিন দুপুরে ক্যু-চক্রী মহলটি এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায় গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে হায়দার আলী। তিন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, এক বিধবা বোন আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তাঁর পরিবার। পৈতৃক ভিটায় সংকুলান না হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে ৩০/৩৫ বছর ধরে বসবাস করছিলেন। সেখানে বাড়ি পাশের চা- পানের দোকানের ওপর পরিবারের ছয় সদস্য নির্ভরশীল ছিল। গ্রামের ওই কুচক্রী প্রভাবশালী মহলের ক্যু-দৃষ্টিতে মিথ্যে অপবাদে তাদের উচ্ছেদ করা হলো। হায়দার আলীর পরিবার এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
হায়দার আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন,মিথ্যা অপবাদে আমার ঘরবাড়ি ও দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমার ছোট মেয়ের নামে অসামাজিক কার্যলাপের অপবাদ দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হলো। ঘটনার পর থেকে মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
এদিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা গেলে দেখা যায় ওই ক্যু-চক্রী মহলটি পানি উন্নয়ন বোডের ওই জায়গাটি ঈদগাঁ মাঠ তৈরীর কথা বলা সীমানা প্রাচীর তৈরী করছে। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোডের অভিযোগে পুলিশ এসে ওই নির্মান কাজ গত শনিবার বন্ধ করে দিয়ে যায়। কিন্তু মহলটি পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সোমবার থেকে সেখানে পুনরায় জয়গাটি দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচির নির্মান শুরু করে।
জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সাজেদুর রহমান বলেন,‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। উচ্ছেদ করার এখতিয়ারও কারো নেই। ওই স্থানে ঈদগাঁ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাজাদা সরকার বিষয়টি নিয়ে কোন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজী হননি।