সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার দুর্নীতি ভোগান্তির শিকার ১৫ হাজার গ্রাহক

মোঃ জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি-

সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিকল ট্রান্সফর্মার মেরামতের নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায। সম্প্রতি এ অভিযোগ করেন শহরের প্রায় শতাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহক।
অভিযোগে প্রকাশ, সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় রয়েছে প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি গ্রাহক। এদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও বাকিদের দেয়া হয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার জন্য জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ পৌর হোল্ডিং এর কাগজপত্র থাকতে হবে। এর একটিরও কমতি থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া সম্ভব নয়।
সরকারের দেয়া ওই আইন অনুযায়ী সৈয়দপুর উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার গ্রাহক তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে জমির সকল কাগজপত্র জমা দেন। কিন্তু সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ সৈয়দপুরে রেল কোয়ার্টার ও রেলের জমিতে বসবাসকারীদের কাছে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছেন। এর ফলে ধারণ মতার চেয়ে অতিরিক্ত লোড হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়ে রাতের পর রাত থাকছে অন্ধকারাছন্ন। আর অন্ধকারাছন্ন এলাকার গ্রহকরা বিদ্যুতের কথা বললেই বিকল ট্রান্সফর্মার সচল করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছে আদায় করছেন হাজার হাজার টাকা। অন্যথায় ট্রান্সফর্মার সচল হয়না এবং বিদ্যুৎ সংযোগও মেলে না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সূত্র জানায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্র“তিতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ আমদানী করেছেন। বৈদ্যুতিক কোন সরঞ্জাম তিগ্রস্থ ও মেরামতের প্রয়োজন হলে সরকারের পে থেকেই সেই অর্থ ব্যায় করা হবে। কোন ক্রমেই গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা চলবে না। কেউ যদি অন্যায় ভাবে গ্রাহকদের হয়রানী করার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই দুর্নীতির মামলা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত জানা যায় উপজেলা প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে ১৪৫টি ট্রান্সফর্মার রয়েছে। এর মধ্যে মোটামুটি সচল রয়েছে মাত্র ৪৫টি ট্রান্সফর্মার। বাকি ১০০টির অবস্থা একেবারেই খারাপ। এগুলি কোনো রকমে জোড়াতালী দিয়ে চালানো হচ্ছে। ৪৫টি ট্রান্সফর্মার দিয়ে ২০ হাজার বৈধ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সুবিধা পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অবৈধ ৫ হাজার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণেই সচল ৪৫টি ট্রান্সফর্মার নষ্ট হওয়ারও উপক্রম হয়েছে। এর প্রমান স্বরুপ শহরের ব্যস্ততম শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়কে প্রায় ৩ দিন থেকে বিদ্যুৎ নেই। শুধুমাত্র অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ উন্নয়নের বোর্ডের ক’জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গ্রাহকরা জানান নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ অবৈধ ভাবে অর্থ উপর্জনের ফলে তিনি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আবাসিক বাস ভবনে না থেকে তিনি বসবাস করছেন বাইরের এক অভিযাত ভবনে। যার মাসিক ভাড়া হল ১২ হাজার টাকা এবং তিনি প্রায় প্রতি মাসে নানান অজুহাতে বিমানে চড়ে ঢাকা যাতায়াত করেন। ওই সূত্রটি বলছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তার প্রতি মাসের অর্থ উপার্জন হয় প্রায় ২ লাখ টাকারও বেশি। যা তিনি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েই অর্থ উপর্জন করে থাকেন। তার খুটির জোর শক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মেলে নেই বলে অভিযোগ তাদের।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ বলেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ক’জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গ্রাহকরা দুদকের মাধ্যমে তদন্ত সাপেে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানানো হয়।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7007880294075380981

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item