অর্থের বিনিময়ে তদন্ত ছাড়া এজাহার রেকর্ডভূক্ত, রংপুর নগরীর মুলাটোলে ভূমিদস্যু ও ঔষধ চুরির হোতা বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালীর রহস্য কাহিনী ফাঁস

হাজী মারুফ রংপুর ব্যুরো অফিস :


রংপুর নগরীর মুলাটোল পাকার মাথায় ভূমিদস্যু, মামলাবাজ ও সরকারি ঔষধ চুরির হোতা মিজানুর রহমান বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগমের রোষানলে পড়ে এলাকার কয়েকজন নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের একের পর এক তদন্ত ছাড়া মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলায় এলাকাবাসি প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। অথচ বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগম ভূমিদস্যুতা, সরকারি ঔষধ চুরি ও ফেন্সিডিল ব্যবসায়ি হলেও তাদের নাম কাওয়াস্তে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড সংলগ্ন বিন্তি ফার্মেসী ও বাড়িতে অনেকের যাতায়াত রয়েছে। আবার মাসোহারার জন্যেও অনেককে ওই বাড়ি ও দোকানের সামনে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। বিশেষ করে কোতয়ালী থানার দুইজন এস আইসহ এলাকার বেশ কয়েকজন বেকার যুবক বেলালের ওই ফার্মেসীতে ঘুরপাক করতে দেখা যায়। জিজ্ঞেস করলে বেলাল বলে, এরা আমার লোক। এভাবে বেলাল এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরী করেছেন। যা বেলালের মোবাইল নাম্বর ট্রাকিং করলে বেড়িয়ে আসবে বলে এলাকাবাসি জানিয়েছেন। আবার গত দুই বছরের জামায়াত-বিএনপি’র ধ্বংসাত্বক কর্মকা-ে একাত্বতা ঘোষণা করে বেলাল ও তার পরিবারের সদস্যরাসহ এলাকার কয়েকজনের ইন্দনে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড থেকে মুলাটোল পাকারমাথা পর্যন্ত ঝটিকা মিছিল বের হতো। এছাড়া বেলার বাবা ও চাচা নীলফামারী জেলার তালিকাভূক্ত রাজাকার বলেও বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুন একাধিক অপকর্মের হোতা মিজানুর রহমান বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগম, ভাই রুহুল আমিন, হুমায়ূন কবীর হিমু, ভাতিজা রায়হান ও ইমরানসহ বেলালের বাহিনী দক্ষিণ মুলাটোল জামে মসজিদের সামনে অপরাধখ্যাত ৯৫ জমির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহী ও শেখ সাদির ১৯ শতক (মামলা চলমান) জমিতে ঘর তুলতে যায়। এতে বাঁধা দেওয়ায় বেলালগং সুকৌশলে নিজের টিন ও বেড়া ভেঙ্গে পরদিন ২৯ জুন আটজনকে অভিযুক্ত করে রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেন। অথচ এঘটনায় এলাকায় শালিশ বৈঠক বসে এবং বৈঠকে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক জেপলিনকে আহ্বায়ক ও ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। বৈঠকে এলাকাবাসির গণস্বাক্ষর রয়েছে। পরে উক্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে কাগজাদি পর্যালোচনা করে দেখেন, ওই ১৯ শতক জমির মধ্যে বেলাল গংদের কোন সম্পত্তি নেই। বেলাল গং জোরপূর্বক অন্যের মামলা চলমান জমিতে ঘর তুলতে গিয়েছিল এবং আইনভঙ্গসহ থানায় মিথ্যা মামলা করেছেন বলে কমিটির উপরোক্তসহ অন্যারা সদস্যরা জানিয়েছেন। যা বেলালের মামলার স্বাক্ষী তার নিজ চাচাতো ভাই মামুন ও চাচী রওশন আরা বেগম সাজানো ও সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা বলে গত ৯ জুলাই রোটারী পাবলিকে এফিডেভিট করেছেন।
এ ঘটনায় মামলা চলমান ১৯ শতক জমির মালিক আলহাজ্ব শেখ সাদী বলেন, ওই জমিতে আমি ও আমার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাই ও আমার বাবা মিলে প্রায় ৭০ শতক জমি ক্রয় করার পর স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। এরমধ্যে আমরা অনেক জমি বিক্রি করেছি। পরে মামলা-মোকাদ্দামায় কিছু জমি হাতছাড়া হয়ে যায়। যার মৌজা-সাতগাড়া, জে.এল নং-৯৪, খতিয়ান নং-২৭৬, হাল খতিয়ান নং-২৭০, দাগ নং-৪১০৬। জমি ফিরে পাওয়ার আসায় মামলা করেছি। যা বর্তমান আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত ২৫ জুন আমার ১৯ শতকের জমিতে থাকা ১৫টি বিভিন্ন প্রজাতের বড় গাছ মিজানুর রহমান বেলাল গং কেটে নিয়ে যায়। আমার দুই ছেলে বিদেশে থাকায় কাউকে কোন কিছু বলার সাহস পাই না।
আবার বেলাল তার মামলায় উল্লেখ করেছে, ঝড়ে তার ঘর ভেঙ্গে পড়ে। আর এজাহার নামীয় আসামীরা ওই ঘরে থাকা নগদ টাকা, তার স্ত্রীর সোনার গহনা, কাতান শাড়ী, টেলিভিশন, স্টিলের আলমারী লুটপাট করাসহ টিন খুলে নিয়ে যায়। এলাবাসি জানায়, প্রকৃতপক্ষে বেলালের সেখানে কোন ঘরই নাই। তাহলে সেখানে মূল্যবান কোন জিনিসপত্রও ছিল না। বেলাল ও তার স্ত্রী, সন্তান নিয়ে রংপুর নগরীর কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড সংলগ্ন বিন্তি ফার্মেসী ও বাড়িতে বসবাস করে। রংপুরে কবে ঝড় হয়েছিল বেলালের এজাহারে তা উল্লেখ নেই। অর্থের বিনিময়ে তদন্ত ছাড়াই এই মামলা রেকর্ডভূক্ত করা হয়েছে এলাকাবাসি মনে করছেন। ওই মামলায় থানা থেকে ঘটনাস্থলের দুরত্ব দেখানো হয়েছে ২ কিলোমিটার। এলাকাবাসি আরো জানান, বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগমসহ বাড়ির অন্য সদস্যরা ভূমিদস্যু, ফেন্সিডিল ব্যবসা এবং সরকারি ঔষধ চুরির হোতা। যে কারণে বেশ কয়েক বছর পূর্বে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেলাল ও তার স্ত্রী রূপালী বেগমকে প্রচুর ফেন্সিডিলের বোতলসহ গ্রেফতার করেন। এছাড়া কয়েকবছর পূর্বে বেলাল গংরা অবৈধভাবে জমি দখল করতে গিয়ে ৯৫ শতক জমির মালিকদের সাথে বিবেদ হয়। সে সময়ও বেলাল তাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছিল। এছাড়াও বেলালের ভাতিজা রায়হান কবীর রংপুর নগরীর ধাপ চেক পোস্ট এলাকার ডাঃ ইউসুফ আহমেদের বাড়ির ৩য় তলার ভাড়াটিয়া অবসরপ্রাপ্ত টিএন্ডটি কর্মকর্তা আঃ হাকিম হত্যা মামলার আসামী। যার কোতয়ালী থানার মামলা নং-১৫, তারিখ-০৬/০২/১২ ইং। বর্তমান সেশন-৩৩০/১২ মামলাটি বিজ্ঞ দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনার তদন্ত করলে বেলালের প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসবে বলে এলাকাবাসি জানিয়েছেন। এছাড়া বেলালের ভাই হুমায়ূন কবীর হিমু একজন ছিনতাইকারী। সে সম্প্রতি মুলাটোল হকের গলিতে মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পরে। এলাকাবাসি তাকে মারপিট করার পর হিমু ওই দুই স্কুলছাত্রের দু’টি মোবাইল সেট ফেরৎ দেয়।
এ ব্যাপারে রংপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঘটনা মিথ্যা প্রমানিত হলে মামলা থেকে সবাইকে অব্যাহতি দেওয়া হবে এবং মিথ্যা অভিযোগের জন্য বাদির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 4415056584314499715

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item