ভূমিদস্যুর নির্যাতনে ৩মাসের অন্তসত্তার গর্ভপাত

এ.আই. পলাশ ঃ ব্রিটিশ শাসন অথবা সেই আদি যুগের জমিদারের জমি চাষ করে নারী ও কৃষকদের উপর নির্মম নির্যাতন করার কথাগুলো যখন এই প্রজন্মের মানুষরা  বই পুস্তকে পড়ে, তখন চোখ দুটো বন্ধকরে সেই ব্রিটিশ শাসন আমলসহ তখনকার জমিদারের রাজত্ব ও নির্যাতনের স্মৃতিগুলো মনে ধারণ করলেই পুরো শরীর কেঁপে উঠে। সেই স্মৃতি বিজরিত কথাগুলো আজ বাস্তবের সাথে মিল না থাকলেও গ্রাম অঞ্চলের কিছু ধুর্ত ব্যাক্তিরা জমিদারের শাসন আমলের ন্যায় এলাকার সহজ সরল ব্যাক্তিদের ঠকিয়ে তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু জমি হাতিয়ে নিয়ে আজ বর্তমান সমাজের বুকে দুই থেকে তিনশত বিঘা জমির মালিক বোনে গেছেন।
আর সেই জমি বিভিন্ন নামে বে-নামে রেখে নিজেরাই জমিদার সেজে ভুমিদস্যুরমত তার পেটোয়া বাহিনী দিযে নিরীহ মানুষদের শাসন করছেন। এরকমই একটি ঘটনার শিকার হয়েছে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নিজভোগডাবুড়ী গ্রামের আবুল হাসেম লিপুর স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী ও ৩মাসের অন্তসত্তা মোছা ঃ রওশন আরা বেগম (২৬) সেই নির্যাতনের শিকার হয়ে ৩মাসের গর্ভের সন্তানটিকে বাঁচাতে পারেনি।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের নিজ ভোগডাবুড়ী গ্রামের মৃত: আব্দুর রহমানের পুত্র জাকারিয়া, হামিদার, কিবরিয়া ও মোশারফের কাছ থেকে ২০০৬ইং সালে ৫২ শতক জমি ৩লক্ষ টাকা ক্রয়কের উক্ত জমিতে আবুল হাসেম লিপু বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃত জমির মালিকরা সেই জমি বিক্রির পর লিপুকে জমি রেজিষ্ট্রী করে দিতে টালবাহানা শুরু করে। এভাবেই কেটে যায় ৯টি বছর। এরই ফাকে সেই ৫২ শতক জমির দামও বেড়ে যায় ১০গুণ সেখান থেকেই এই মামলা মকদ্দমার সূত্রপাত হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ শে আগস্ট ২০১৫ইং সকাল ৯টার দিকে আবুল হাসেম লিপু প্রতিদিনের ন্যায় নিজ বাড়ি থেকে তার চাকুরীর কর্মস্থলে চলে যায়। সেই সুযোগে সুযোগ সন্ধানী আসামীগণ তার বাড়িতে প্রবেশ করে তার বাড়ি ভাংচুর সহ ১,৫০,০০০/- টাকা, ১ ভরি ১০আনার স্বর্ণালঙ্কার সহ তার মুল্যবান কাগজপত্র ও দলিল ট্রাংক ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী রওশন আরা বাধা দিলে তাকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পাশক্ষবর্তী   আজাদ আলী ওরফে পিতলের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বেধরক মারপিঠ শুরু করে ও তার শরীরের কাপর চোপর ছিড়ে ফেলে এসময় আসামীগণ তাকে এবং পেটের সন্তানের জীবন নাশের হুমদিয়ে ১৫০/- টাকার সাদা স্ট্যাম্পে রওশন আরার স্বাক্ষর নেয়। এসময় উক্ত এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের  পুত্র হাচান আলী (ভ্যান চালক) রওশন আরার ব্যাপক মারপিটের কারণে রক্তপাত হওয়ায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চিলাহাটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে রওশন আরার শরীরের অবনতী হলে তড়িঘড়ি করে তাকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেøক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার আঘাত পাওয়ার কারণেই সেই গর্ভের ৩মাসের সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়। এব্যাপারে গত ৩০/০৮/২০১৫ইং তারিখে নীলফামারী বিজ্ঞ আমলী আদালত নং-২ এ মোঃ আবুল হাসেম ওরফে লিপু বাদী হয়ে  ১০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পিটিশন নং-৮২/২০১৫, আসামীরা হলেন ,জাকারিয়া (৩৫) হামিদার (৫০) কিবরিয়া (৩০) মোশারফ (৪০) উভয়ের পিতা মৃত: আব্দুর রহমান, রাজু (৩০) সাজু (২৫) পিতা: হামিদার, আমজাদ আলী পিতল (৪০) পিতা নওশাদ আলী, আজাদ আলী ভুট্ট (৪৫) আশরাফ আলী (২২) পিতা: নওশাদ আলী, দুলু (৩৫) পিতা-মৃত: জাবেদ আলী সর্বসাং- নিজভোগডাবুড়ী।
অপরদিকে উক্ত মামলার আসামী জাকারিয়া, হামিদার, কিবরিয়া ও মোশারফ এর সঙ্গে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা সাংবাদিকদের জানান, ২০০০৬ সালে এই মামলার বাদী লিপু নিজ বাড়ি করার জন্য আমাদের কাছে আদিয়ার হিসাবে জায়গাটি নেয়। তবে তার সঙ্গে আমাদের জমি বিক্রির বিষয়ে কোনপ্রকার লেনদেন হয়নি এবং তার কোন প্রমান নেই। যে বিষয়ে মামলাটি হয়েছে সেটাও ভিত্তিহীন। তারা নিজেরাই অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। সুষ্ট তদন্ত হলেই আসল ঘটনাটি প্রকাশ পাবে। একটি কুচক্রী মহল সমাজে আমাদের হেয় করার জন্যই উক্ত মামলার বাদিকে কু-পরামর্শ দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। বর্তমানে এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3963886245113167089

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item