ট্রেনের ধাক্কায় ৪ পুলিশ নিহত॥ রেলওয়ের তদন্ত প্রতিবেদন

আবু ফাত্তাহ্ কামাল (পাখি),স্টাফ রিপোর্টারঃ
 নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঢাকাগামী আন্তঃনগর নীলসাগর ট্রেনের ধাক্কায় সাথে পুলিশ পিকআপ ভ্যানে থাকা ৪ পুলিশ নিহত ও ৭ জন আহতের ঘটনায় গঠিত রেলওয়ের পশ্চিমঞ্চলের পৃথক দুটি তদন্তটিম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে দুটি তদন্ত টিমই দুর্ঘটনার জন্য সৈয়দপুর থানার পিকআপ ভ্যানের চালক ঘটনায় আহত কনস্টেবল মোকছেদ আলীকে এককভাবে দায়ী করেছে। শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে নিশ্চিত করেন রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) শওকত জামিল মহসী।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটির অগ্রজ দলের সদস্য রেলওয়ের পার্বতীপুরের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী (ইএন) সৈয়দ জয়নাল আবেদীন, সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী (এএমই/সি) মো. মিজানুল ইসলাম সরদার ও সহকারী সার্জন (এএস) মো. আনসুল হক স্বাক্ষরিত প্রাথমিক তদন্তে উল্লেখ করেছেন, ‘এই দুর্ঘটনার জন্য পিকআপ ভ্যানের ড্রাইভার  মোকসেদ আলী এককভাবে দায়ি। তিনি যদি সতর্কতার সাথে রেলওয়ের নির্দেশাবলী অনুসরণ করতেন তাহলে ওই দুর্ঘটনা ঘটত না’।
একই ধরণের আরেকটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা করেছে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) শওকত জামিল মহসীর নেতৃত্বে মূল তদন্ত টিমও। মুঠো ফোনে এই টিম প্রধানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমা করা হয়েছে। রিপোর্টে তিনি মোটরযান আইনের ১৯৮৩ সালের ১৪৩ ধারা মোতাবেক পুলিশের ভ্যান চালকই দোষি হবেন বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে নীলফামারী পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক ৫ সদস্যের গঠিত পৃথক একটি তদন্ত টিম তাদের তদন্ত কাজ অব্যাহত রেখেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন, এলাকাবাসী সহ রেল ও সংশ্লি¬ষ্ট পুলিশের সাথে কথা বলেছেন। ২/১ দিনের মধ্যে তারাও রিপোর্ট প্রদান করবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে  দুর্ঘটনা কবলিত পুলিশ পিকআপ ভ্যানের চালক কনস্টেবল মোকছেদ আলী কে নীলফামারী পুলিশের মটরযান শাখায়  ক্লোজ করা হয়েছে বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হাসান।
উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট রাতে চিলাহাটি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা আন্ত:নগর নীলসাগর ট্রেনটি সৈয়দপুরের  ঢেলাপীর লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় সৈয়দপুর থানার পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সৈয়দপুর থানার ৪ জন পুলিশ সদস্য যথাক্রমে দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন কনস্টেবল শামসুল হক, কনস্টেবল মাইদুল ইসলাম, কনস্টেবল শরিফুল ইসলাম ও কনস্টেবল ফারুক হোসেন নিহত ও ৭ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে সৈয়দপুর থানার এসআই নাজমুল হোসেন, এএসআই আব্দুল আজিজ, এসএএফ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন, এসএএফ কনস্টেবল রিপন চন্দ্র চৌধুরী সহ ৪জন উন্নত চিকিৎসায়  ঢাকায় এবং  রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কনস্টেবল কবির হোসেন। এ ছাড়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হয়ে ফিরেছে সৈয়দপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন, গাড়িচালক কনস্টেবল মোকছেদ আলী।
 ওই দূর্ঘটনায় ১৫ আগষ্ট সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় তিনটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়। এই দুর্ঘটনার বিষয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ের জিআরপি থানায় পুলিশের পক্ষে একটি ও রেলওয়ের পক্ষে দুইটি সহ পৃথক তিনটি জিডি করা হয়েছিল। রেলওয়ের পক্ষে দুটি জিডিতে ট্রেনের সাথে পুলিশের পিকআপভ্যানের সংঘর্ষের কথা অস্বীকার করা হয়। অপর দিকে পুলিশের পক্ষে সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেয়াজুল ইসলাম দূর্ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে রেলওয়ে থানায় দায়ের কথা জিডিতে তিনি নীলসাগর ট্রেনটি হুইসেল না দিয়ে বেপরোয়া গতিতে অরক্ষিত ঢেলাপীর রেলক্রসিং অতিক্রমকালে ট্রেনের ধাক্কায় সৈয়দপুর থানার পিকআপ ভ্যান (নম্বর: নীলফামারী-ঠ-১১-০০১০) দুমড়েমুচড়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন ৪জন নিহত ও ৭ জন আহত হবার কথা বলেন।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 8693706362700123371

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item