নীলফামারী জেলায় ভুয়া কাজীর দৈরত্ব বাল্যবিয়ের হিরিক

এ.আই পলাশঃ বর্তমান সরকার বাল্যবিয়ে বন্ধের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রসাশনের মাধ্যমে কঠোর আইন ও প্রচার চালানোর পরেও এক শ্রেণীর অভিভাবক গোপনে ভুয়া কাজীর সহযোগীতায় তাদের অপ্রাপ্ত ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেয়ার বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য-সদস্যাগণ প্রকাশ্যে বাল্যবিয়ের বিরোধীতা কররেও গোপনে তারা সেই বিয়েতেই সহযোগীতাও করছে। এই সহযোগীতার মুল কারণ শুধু ভোট পাওয়ার আশা। আর সেই সুযোগে ভুয়া কাজী কমিশনের মাধ্যমে অনায়াসে বাল্যবিয়েগুলো ভুয়া বিবাহ রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অকালেই দুইটি জীবনসহ দুইটি পরিবারকে সর্বশান্ত করে পথে বসিয়ে দিচ্ছে।
শুধু এখানেই এই গল্পটির শেষ নয়, ভবিষ্যতে এই দুই পরিবারের মধ্যে এই বাল্যবিয়েকে কেন্দ্র করে দন্দ হলে কোন পক্ষই আইনি আশ্রয় নিতে পারছেন না। একটি বিশেষ সুত্রে জান গেছে, গত ১৫ দিনে ভোগডাবুড়ী ও কেতকীবাড়ী ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি বাল্যবিয়ে প্রসাশনের চোখে ফাকি দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের সুইটি আক্তার (১৪) পিতা-আবু হোসেন, আলিফ জাহান (১২) পিতা- হাচান, রঞ্জনা আক্তার (১৫) পিতা-যাদু সরকার, মোফেজা (১৪) পিতা-মোতালেব, ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের আর্নিকা (১৪) পিতা-আপেল। এই ধরণের বাল্যবিয়ে গোপনে এলাকায় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েই চলছে।
জানা গেছে নীলফামারী জেলার প্রতিটি জেলা, উপজেলা , পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় গত ২০০৯ইং সালের ১০ই সেপ্টেম্বর স্মারক নং-১০১৩ অনুসারে নিকাহ রেজিস্টার গণের হালনাগাদ তথ্য প্রেরণে এই জেলার মোট কাজীর নাম ও স্থান প্রকাশ করেন সিনিয়র সহকারী সচিব এ.কে এম শহীদুল ইসলাম বিচার শাখা-৭ এবং কপি প্রেরণ করেন জেলা রেজিস্টার রণজিৎকুমার সিংহ। সেই সূত্রে জানা যায় নীলফামারী জেলার ৬০টি ইউনিয়নে ৫০জন কাজী রয়েছে। পৌরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি কাজী রয়েছে ১০ জন, নীলফামারী সদর ইউনিয়নে ৮জন, সৈয়দপুর ইউনিয়নে ৬জন, জলঢাকা ইউনিয়নে ১১জন কিশোরগঞ্জ ইউনিয়নে ৮জন, ডোমার ইউনিয়নে ৮জন, ডিমলা ইউনিয়নে ৯জন, নীলফামারী পৌরসভায় নিয়োগকৃত দুইজন, সৈয়দপুর পৌরসভায় নিয়োগকৃত ৫জন, জলঢাকা পৌরসভায় নিয়োগকৃত ২জন, ডোমার পৌরসভায় নিয়োগকৃত ১জন। ২০০৯ সালের এই প্রজ্ঞাপন জারির পর বিভিন্ন ইউনিয়নের কাজী হিসাবে নিয়োজিত কাজীগণ তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক সময়ে মন্ত্রণালয়ে জমা না দেওয়ার কারণে ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী, বোড়াগাড়ী ও জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের নাম প্রকাশিত কাজীদের বাতিল করা হয়। সেই সুযোগে এলাকার কিছু সুয়োগ সন্ধানী ব্যাক্তিরা ভুয়া কাজী রেজিষ্টার বই সংগ্রহ করে গোপনে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার কিছু সুযোগ সন্ধানী ব্যাক্তিদের সহযোগীতায় তারা তাদের সেই বে-আইনিভাবে বিবাহরেজিষ্ট্রির কাজ করছে।  অদ্যবধি সেই স্থাগুলোতে এখন পর্যন্ত কোন কাজী নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একজন কাজীর পক্ষে একটি ইউনিয়নে বিয়ের কাজ করা সম্ভব নয় তাই আমরা অনেক সময় দুই একজন পরিচিত ব্যাক্তিকে বিবাহের রেজিষ্ট্রী বই দিয়ে বিয়ে রেজিষ্ট্রীর জন্য পাঠাই। সেই সূত্র ধরেই এই ব্যাক্তিগুলো পরে গোপনে বগুড়ার আঞ্চলিক কার্যালয় বোবা হাইস্কুল অফিস থেকে মাত্র ৪২০ টাকা জমা দিয়ে ভুয়া কাগজের মাধ্যমে তারা এই বইগুলো সংগ্রহ করে এলাকায় বিভিন্নভাবে বাল্যবিয়ে সহ বিভিন্ন তালাক, কাজীনামা বিরতীহীন ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। অভিজ্ঞ মহলরে প্রশ্ন বর্তমান সরকার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য-সদস্যা ও স্থানীয় গ্রামপুলিশকে বাল্যবিয়ের ব্যাপারে তাদের প্রসাশনের পক্ষ থেকে জোড়ালো ভাবে আইনের আশ্রয়ের মাধ্যমে এই বাল্যবিয়ে বন্ধের করা নির্দেশনা দিলেই হয়তো আগামীতে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3380093855037102976

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item