দেড় লাখ মানুষ বন্যা কবলিত তিস্তা বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত
https://www.obolokon24.com/2015/07/tista_13.html
আবু ফাত্তাহ্ কামাল (পাখি),স্টাফ রিপোর্টারঃ
উজানের ঢলে তিস্তার পানি গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে আজ সকাল ৬টা থেকে ডালিয়া পয়েন্টের তিস্তা ব্যারাজে নদীর পানি বিপদসীমার (৫২দশমিক ৪০) ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত শনিবার এই পয়েন্টে তিস্তার প্রবাহ বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোডের ডালিয়া ডিবিশনের বন্যা পুর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে উজানের ঢলের বন্যায় তিস্তা অববাহিকা ভয়ঙ্কর রূপে গর্জে উঠে প্রবল স্রোতে শোঁ শোঁ শব্দে ভাটির দিকে ধাপিত হচ্ছে। এতে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় দেড় লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।নদীর পানি উপচে পড়ায় তিস্তা বাম ও ডান তীরের বাঁধ ঘেঁষে প্রবাহ হচ্ছে। সেই সাথে বাঁধের হার্ডপয়েন্ট ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
তিস্তা অববাহিকার রাত ১২টা থেকে উজানের ঢলের পানি ঘরবাড়িতে প্রবেশ করা শুরু করে। যা কোমড় সমান তলিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এখন।
তিস্তার বানের পানিতে তিগ্রস্ত এলাকা হলো নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলা। এসব উপজেলার বাইশপুকুরচর, কিসামত ছাতনাই, ঝাড়শিঙ্গেরশ্বর, বাঘেরচর, টাবুর চর, ভেন্ডাবাড়ি, ছাতুনামা, হলদিবাড়ী, একতারচর, ভাষানীর চর, পুর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, কৈমারী এলাকা ঘরবাড়িতে কোমড় সমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পশ্চিম বাইশপুকুর থেকে পূর্ব বাইশপুকুরের ৪কিলোমিটার বালুর বাধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বাধটি ভেঙ্গে গেলে পূর্ব বাইশপুকুর, পশ্চিম বাইশপুকুর, সতিঘাট, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ীসহ ১০টি গ্রামের কয়েক শত বাড়ীসহ সহ¯্রাধিক বিঘা আবাদী জমি নদীগর্ভে বিলিন হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। লোকজন নিরাপদে সরে গেছে।
খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান আলী জানান তাদের গ্রামের প্রতিটি পরিবারের ঘরে হাটু পানির নিচে রয়েছে। ঘরের ভেতর দিয়ে সমান ¯্রােত বয়ে যাচ্ছে। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, তার এলাকার পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন জানান, কিছামত ছাতনাই চরের ২শত পরিবারকে বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন বলেন, চরখড়িবাড়ী গ্রামের ৩ শতাধিক পরিবারকে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিবিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উজানে ঢলে তিস্তা পানি আজ রবিবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধিও কারনে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জণকপাট খুলে রাখা হয়েছে।