দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর নির্মাণের মেয়াদ বাড়লো তৃতীয় দফায়

হাজী মারুফ রংপুর বুরে‌্যা অফিস : 

দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের কাজ তৃতীয় দফা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এদিকে দফায় দফায় এই সেতু নির্মাণের সময় বৃদ্ধি করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রংপুরের গংগাচড়া ও লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে তিস্তা নদীর ওপর উপর নির্মিত হচ্ছে এই সেতু। সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের অজুহাত রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সময় মত এর অর্থ যোগান ও মালামাল পরিবহনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ায় সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এলজিইডি’র প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ের পর অতিরিক্ত ১ বছর সময় বাড়ানোর পরও সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৬৫ শতাংশ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অর্থ সংকটের কারণে ৩য় দফায় ফের বাড়ানো হয়েছে কাজের মেয়াদকাল।
সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলা চরাঞ্চলের শত শত মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। পাশাপাশি লালমনিরহাট জেলার সদর, আদিতমারী, কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার সাথে রংপুরের সড়ক পথে দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার  কমে আসবে। ফলে বাঁচবে সময় এবং জ্বালানি খরচ।
এলজিইডি লালমনিরহাট কার্যালয় সূত্র প্রথম খবরকে জানিয়েছে, ২০১০ সালের ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিস্তা নদীর উপর গঙ্গাচড়া-কালীগঞ্জ সড়ক সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুরে গ্রামীণ যোগাযোগ ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে এটিকে অনুমোদন দেয়া হয়।
২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের গংগাচড়া উপজেলায় দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। লালমনিরহাট এলজিইডি’র অধীনে এই সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ডাব্লিউ এমসিজি-নাভানা গ্রুপ’।
সেতু এলাকায় কালীগঞ্জের মোটর সাইকেল আরোহী রানা মিয়া (৪০) জানান, অনেক আশা ছিল সেতুর উপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যেতে পারব। কিন্তু কাজের ধীর গতির কারণে এখানকার মানুষের সেই আশা পূরণ হচ্ছে না। সেতু না থাকায় ভরা বর্ষায় নৌকায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল তিস্তা পাড়ি দিতে হয়। এ কারণে এলাকার মানুষজন খুবই কষ্টে আছেন।
আদিতমারী উপজেলার ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম (৫৫) বলেন, সেতুর নির্মাণ শেষ হলে সময়ের সাথে পণ্য পরিবহণের খরচ অনেক কমে আসবে। ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ফুটপাতসহ ৯.৫ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি টাকা। সেতুর নির্মাণ কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২২ মাস। এছাড়া গঙ্গাচড়ার মহিপুর হতে কালীগঞ্জের কাকিনা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সংযোগ সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। ওই সংযোগ সড়কে তিনটি কালভার্ট ও দু’টি ছোট সেতুর নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি টাকা। সেইসাথে মূল সেতু ও পুরো সড়কজুড়ে থাকছে আলোর ব্যবস্থা।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের জুন মাসে সেতুর ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু তারপরও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডব্লিউ এমসিজি-নাভানা গ্রুপের প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রদীপ কুমার বলেন, সেতুর কাজ সম্পন্ন করার জন্য সময় বৃদ্ধির আবেদনের প্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ সময়ের মধ্যেও সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্নের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেন।
লালমনিরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন জানান, রাজনৈতিক অস্থিরতা কাজের গতি কিছুটা কমে আসলেও বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলছে।
ইতোমধ্যেই সেতুর ৬৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে তিনি জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের মেয়াদকাল বাড়ানো হলেও এক্ষেত্রে কোন ব্যয় বাড়বে না। এই সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 7679618013768363918

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item