কুড়িগ্রামের বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ১২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

হাজী মারুফ রংপুর বুরে‌্যা অফিস :

দেশের ১৮তম কুড়িগ্রামের বঙ্গসোনাহাট স্থল বন্দরটি চালু হলেও অবকাঠামো নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেই সরকারের। এ অবস্থায় বন্দরের কোন সুবিধা ছাড়াই চলছে বন্দরের কার্যক্রম।
জেলা কাস্টম অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বঙ্গসোনাহাট বন্দর দিয়ে কয়লা ও পাথর আমদানী শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত গত ৭ মাসে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৬২ হাজার ৭শ ৪৫ মেট্রিক টন কয়লা ও ৪৫ হাজার ২শ ৩৫ মেট্রিক টন পাথর আমদানী করে ব্যবসায়ীরা। এতে করে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ১২ কেটি টাকা। কয়লা ও পাথর আমদানী করে রাজস্ব দিলেও নানা সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।
পাশাপাশি দু’দেশের সরকার অনুমোদিত সবগুলো পন্য আমদানী রপ্তানী শুরু না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। কয়েক দফা উদ্বোধনের পর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গসোনাহাট স্থল বন্দর দিয়ে শুরু হয় ভারত থেকে কয়লা ও পাথর আমদানী। অন্যদিকে স্থল বন্দরের ভারতীয় অংশে সকল অবকাঠামো নির্মাণ হলেও বাংলাদেশ অংশে অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াই চলছে বন্দরের কার্যক্রম। ভারতের আসাম, মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, অরুনাচল ও মেঘালয় রাজ্য থেকে স্বপ্ল সময় ও কম খরচে পণ্য আমদানী ও রপ্তানী সুবিধা থাকায় ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বন্দরটি আবারো চালু করা হয়। গত ৭ মাসে এ বন্দর থেকে শুধু মাত্র কয়লা ও পাথর আমদানীতে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় ১২ কেটি টাকা। এ বন্দর দিয়ে ভারতের ১০ টি পণ্য আমদানী ও বাংলাদেশের সব ধরনের পন্য রপ্তানীর কথা থাকলেও এর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে হতাশায় পড়েছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। বন্দর দিয়ে পুরোদমে পন্য আমদানী ও রপ্তানী শুরু না হওয়ায় স্বপ্ল পারিশ্রমিকে কাজ করতে হচ্ছে শ্রমিকদের। অবকাঠামো না থাকায় পন্য লোড-আনলোডে ন্যায্য মুজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। পাশাপাশি শ্রমিক নেতাদের খবরদারীর নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
বঙ্গসোনাহাট স্থল বন্দরের কুলি শ্রমিক আতাউল জানান, স্থল বন্দরে শুরুর দিকে ভালো ইনকাম হলেও বর্তমানে শ্রমিক নেতারা টাকার বিনিময়ে শ্রমিক বাড়াচ্ছে। এতে করে শ্রমিকের কার্ড নিয়েও বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের। সপ্তাহে মাত্র ২টি থেকে ৩টি ট্রাকের মাল আনলোড-আপলোড করতে পারি। এতে করে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫শ টাকা পাই যা দিয়ে সংসার চলছে না।
স্থল বন্দরের মহিলা শ্রমিক জমিলা জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কয়লা ও পাথর সরানোর কাজ করি। ১শ ৫০ টাকা হাজিরা পাই। অথচ সমান কাজ করলেও পুরুষদের ২শ টাকা দেয়। আমরা হাজিরা কিছু বাড়িয়ে চাই।
স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী শাহীন আহমেদ জানান, ভারত থেকে কয়লা, পাথর, তাজাফল, ভুট্রা, গম, চাল, ডাল, রসুনসহ মসলা জাতীয় ১০ টি পন্য আমদানী ও বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের পন্য রপ্তানীর অনুমোদন থাকলেও ভারত থেকে শুধুমাত্র কয়লা ও পাথর আমদানীর অনুমোদন রয়েছে। পাশাপাশি অবকাঠামো না থাকা এবং দুধকুমর নদীতে সংযোগ রক্ষাকারী সোনাহাট রেলসেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সকল সমস্যা সমাধান করে পুরোদমে স্থল বন্দরটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।
কুড়িগ্রাম বঙ্গসোনাহাট স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট সভাপতি, সরকার রকিব আহমেদ জুয়েল জানান, পণ্য পরিমাপের স্কেল (ওয়ে ব্রীজ) না থাকায় ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। অবকাঠামোসহ দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কাস্টম এক্সসাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার শাকিল খন্দকার জানান, গত ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ৭ মাসে এ বন্দর দিয়ে শুধু ২টি পন্য থেকে ১২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ অবকাঠামো নির্মাণসহ সকল সমস্যার সমাধান করলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসার পরিধিও বাড়বে, উন্নয়ন হবে আর্থ সামাজিক অবস্থার। ব্যাপক সম্ভাবনার এ স্থল বন্দরটির সকল সমস্যা সমাধান করে ব্যবসা প্রসারে এগিয়ে আসবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 6051189502066055640

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item