রংপুরের মঞ্চে নেই নতুন নাটক

হাজী মারুফ,ব্যুরো প্রধান,রংপুর ব্যুরোঃ
সংস্কৃতি সমৃদ্ধ উত্তরের ঐতিহ্যবাহী জেলা রংপুরে বর্তমানে নাটকপাড়ায় নেই নতুন নাটকের মহড়া। এতে করে ঝিমিয়ে পড়ছে নাট্যকর্মীরা। অন্যদিকে নতুন নাটকের অভাবে মঞ্চ নাটক বিমুখ হয়ে পড়ছে নাট্যানুরাগী দর্শকও। 

গত এক বছরে রংপুর নাট্যকেন্দ্র’র প্রযোজনায় নতুন মঞ্চ নাটক ‘শিখন্ডী কথা’র মঞ্চায়ন ছাড়া অন্য নাট্য সংগঠনগুলো ছিলো পুরোনো নাটক নিয়ে। নাটকপাড়া হিসেবে পরিচিত রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠের সংস্কৃতি চত্ত্বর টাউন হলকে ঘিরে গড়ে ওঠা নাট্য সংগঠনগুলোতে খোঁজ নিয়ে এতথ্য জানা গেছে। বর্তমানে টাউন হল চত্ত্বরে যেসব নাট্য সংগঠন রয়েছে শিখা সংসদ, রংপুর নাট্যকেন্দ্র, রংপুর থিয়েটার, রংপুর নাট্যচক্র, সারথি নাট্য সম্প্রদায়, বিকন নাট্যকেন্দ্র, রঙ্গপুর নাট্যধারা, রংপুর পদাতিক ও অভিযাত্রিক। এছাড়া শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে রংপুর শিশু নাট্যকেন্দ্র নামে আরেকটি ব্যতিক্রম নাটকের দল। ছোটদের এই দলটি এরই মধ্যে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবে অংশ নিয়েছে বেশ কয়েকবার।
সবমিলে টাউন হল চত্ত্বরে এখন ১০টি নাট্য সংগঠন রয়েছে। যাদের মধ্যে হাতেগণা ৩টি সংগঠন ছাড়া বাকিগুলোতে নাটক নিয়ে নেই তেমন কোনো মহড়া। নেই নতুন মঞ্চ নাটক মঞ্চায়নের উদ্যোগ। একারণে ঝিমিয়ে পড়া এনাট্য সংগঠনগুলোকে বেগ পেতে হচ্ছে নতুন নাট্যকর্মী সংগ্রহে। 
সুত্রে জানা গেছে, ১৯৬৬ সালের ২৩ মার্চ শিখা সংসদের জন্ম। তখন একদল মঞ্চনুরাগী তরুণের জোয়ার ছিলো। দর্শকরাও ছিলো মঞ্চ নাটকের জন্য পাগল। প্রতি মাসে কোনো না কোনো দলের নাটক মঞ্চায়ন হতো। এখন তা আর নেই।’
গত কয়েক বছরে রংপুরে নাট্য সংগঠনগুলোতে নতুন নাটকের মঞ্চায়ন খুব বেশি হয়নি। স্থানীয় বিভিন্ন নাট্য উৎসবে এবং সংগঠনগুলো নিজস্ব প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে পুরোনো নাটকের মঞ্চায়ন করে আসছে। এর অন্যতম কারণ নতুন প্রোডাকশনের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন। তা যোগান দিতে না পারা। তাছাড়া নাট্যশিল্পী এখন সবচেয়ে অবহেলিত সস্তা শ্রমিক। তাদের কোনো পারিশ্রমিক নেই। বরং বিনোদন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ‘নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে হচ্ছে’ বলে আপে প্রকাশ করেন নাট্যকর্মীরা।
রংপুর নাট্যকেন্দ্রের সভাপতি কাজী মো. জুননুন বলেন, ‘সব দলই চায় নতুন নাটকের মঞ্চায়ন হোক। কিন্তু একটি নাটকের মহড়া থেকে মঞ্চায়ন পর্যন্ত যত ব্যয় হয়, তা ম্যানেজ করা আসলেই কষ্ট সাধ্য। তারপরও চেষ্টাতো থেমে নেই। পুরোনো দিয়ে হলেও মঞ্চ নাটক এখনও বেঁচে আছে।’
এসময় গত প্রতিষ্ঠাতার ১৭ বছরে রংপুর নাট্যকেন্দ্র দেশে ও বিদেশে মেরাজ ফকিরের মা, মুক্তধারা, ঘাসফুল, শিখন্ডী কথা, বাগদী ধীরুয়াল, অগ্নুৎপাত, শিখড়ে ক্যান্সার, উন্মনা মন, ুদিরামের মা, ভ্রু তাংতাংসহ প্রায় ২০টি নাটকের মঞ্চায়ন করেছে বলে জানান তিনি।
কাজী জুননুন বলেন, ‘আমরা জন্মলগ্ন থেকেই চেষ্টা করছি প্রতি বছর অন্তত একটি হলেও নতুন নাটকের মঞ্চায়ন করতে। কিছুটা হলেও সফল হয়েছি’।
বর্তমানে থিয়েটার বিমুখী তরুণ-তরুণীদের কারণে অন্যান্য নাট্য সংগঠনগুলো নতুন নাটক ধরতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানান নাট্যশিল্পী ও সংগঠক এম এ মজিদ, কাইয়ুম খান, নার্গিস রহমান, হাসান আলী, রাজ্জাক মুরাদ, নিজামুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
তারা বলেন, ‘কম হোক আর বেশি হোক দর্শকতো এখনো মঞ্চ নাটক দেখতে আসেন। কিন্তু আমরাতো অর্থাভাবে নতুন নাটকের মহড়া ও মঞ্চায়ন করতে চাইলেও তা করতে পারছি না’।
এসময় সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় সকল বৃত্তমান সংস্কৃতিনুরাগী মানুষকে মঞ্চে নাটকের মাধ্যমে সমাজের অনিয়ম ও দূর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রত্যাশার সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানে নাট্যশিল্পীদের নাট্য আন্দোলনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এ সকল নাট্য সংগঠক।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 312714358220977857

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item