সড়ক সংস্কারের অভাবে ডিমলায় জনদুর্ভোগ চরমে

জাহাঙ্গীর আলম রেজা, ডিমলা, নীলফামারীঃ নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার সুটিবাড়ি ডালিয়া সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এ অবস্থা চললেও দেখার কেউ নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানায়  ডিমলা উপজেলা শহর থেকে সুটিবাড়ি - ছোটখাতা হয়ে ডালিয়া পর্য়ন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার অতিক্রম করে ওই পথে রংপুর, লালমনিরহাট, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও বুড়িমারি যাতায়াত করতে হয় ওই এলাকার মানুষজনকে।
ওই পথে প্রতিদিন চলাচল করে ছয়টি ঢাকার যাত্রীবাহি বাস, একখানা বিআর টিসি কোচ ও সঠিবাড়ি থেকে রংপুর চলাচল করে প্রায় ১০ খানা যাত্রীবাহি বাস এবং শতাধিক মালবাহি ট্রাক, মিনি ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিক্সাসহ অসংখ্য যানবাহন। কিন্তু ওই সড়কের ছোটখাতা এলাকায় তিন কিলোমিটার পথ খানাখন্দে ভরে থাকায় দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে ওই পথের যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায় ওই সড়কের বিস্তির্ণ এলাকা জুরে খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টির পানি ও কাদামাটিতে একাকার হয়ে আছে গোটা সড়ক। এ সময় কথা হয় ওই পথের অটোরিক্সার যাত্রী ছোটখাতা গ্রামের লায়েম আল মামুনের (৩০) সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তাটা ভয়য়াবহ খারাপ হয়েছে। রাস্তা খারাপের কারণে এখন বাস চলাচল কমে গেছে, ভাঙ্গা রাস্তার কারণে প্রতিনিয়ত গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটেছে, প্রায় দেড় দুই বছর ধরে এ অবস্থা চললেও   দেখার কেউ নেই। ডালিয়া বাজারের ট্রাক বন্দোবস্তকারী দুলাল দেওয়ান (৪০) বলেন, ভাঙ্গা  রাস্তার কারণে প্রায় ট্রাকের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে, চাকা ফেসে যাচ্ছে, আবার কখনো মালামালসহ ট্রাক উল্টে যাচ্ছে। এ কারনে ওই পথে ট্রাক যেতে চায় না। যে কাজ এক দুই কথায় হতো, সেই কাজ এখন ১০ কথায়ও হয় না। ভাড়াও বেশি দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন প্রতিদিন এই পথে শতাধিক ট্রাক পাথর বালি নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। রাস্তাটা সংস্কার করা খুবই জরুরী। ট্রাকচালক জয়নাল আবেদীন (৪০) বলেন, রাস্তার যে অবস্থা তাতে বেশি ভাড়ায়ও পোষায় না। একবার ফেসে গেলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ধরা খেতে হয়। সেখানে ঢোকার পর বের হওয়ার নিশ্চয়তা খুবই কম। সুটিবাড়ি বাজারের আতিক মেশিনারিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও রংপুর সরকারী কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু আলাল হোসেন বলেন, আগে রংপুর থেকে একটা কার্টুণ আনতে ভাড়া পড়তো ২০ টাকা। এখন রাস্তা ভাঙ্গার কারণে ৫০ টাকা দিতে হয়। প্রায় দেড় বছর ধরে এ অবস্থা চলছে, কিন্তু সরকার রাস্তা মেরামতের কোনো উদ্যেগ নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, সুটিবাড়ি থেকে ওই পথে ঢাকার ছয়টা যাত্রীবাহি বাস চলে, একটা বিআরটিসি এবং সঠিবাড়ি রংপুর আধা ঘণ্টা অন্তর যাত্রীবাহি বাস চলাচল করে। মালবাহি ট্রাকা চলে শতাধিক। এ ছারা জরুরী প্রয়োজনে রোগি নিয়ে যেতে বিরম্বনায় পড়তে হয়। অনেক সময় বিকল্প পথে প্রায় ৪০ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরে যেতে হয়। তিনি বলেন ডিমলা থেকে লালমনিরহাট, হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও বুড়িমারী যাওয়ার এটাই একমাত্র সড়ক। এ ছাড়া ডিমলা সদরের শহীদ মিনার দিয়ে (ডোমার-ডিমলা) সড়কটির ডিমলা অংশের প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের অভাবে অচল হয়ে পড়ছে। উল্লেখ্য ২০১০-১১ অর্থ বছরে সদর হতে নীলফামারী ও ডোমারের সাথে ডিমলার দুরুত্ব কমিয়ে আনতে সড়কটি নির্মান করে এলজিইডি। ৫ বছরে সড়কটির কোন প্রকার সংস্কার না করায় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে ছোট বড় সব ধরনের যান চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে বেহাল দশায় পড়ছে সড়কটি। এ ব্যাপারে কথা বললে ডিমলা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী জিকরুল আমিন বলেন, সড়কটির তিন কিলোমিটার সংস্কার করা জরুরী, কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ওই পথে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ৬০ টন মালামাল নিয়ে ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাটি বেশি ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। সেখানে অনেক গর্ত হয়েছে, বরাদ্দ পাওয়া গেলে আগামী অর্থবছরে ডাব্লু বিএম ও কার্পেটিং করতে হবে। এতে খরচ হবে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। এ বিষয়ে কথা বললে, নীলফামারী ১ ডোমার ডিমলা আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বলেন, মাত্র তিন কিলোমিটার সড়কের কারণে সেখানে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে, সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল, আমি স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, আশা করছি আগামী অর্থ বছরের শুরুতে কাজটি শুরু করা যাবে।  তিনি বলেন, এখন মেরামত করতে যদি এক কোটি টাকা লাগে, এক বছর পর ওই কাজ করতে গেলে দুই কোটি টাকা লাগবে। তাই অযথা সরকারের লোকসান কমাতে উক্ত রাস্তাটি সংস্কারের চেষ্টা চলছে।

পুরোনো সংবাদ

জনদূর্ভোগ 4565631946919579726

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item