ছিটমহলবাসীদের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদানের আশ্বাস জেলা প্রশাসকের, আনন্দে আতœহারা ছিটমহলবাসী

ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ ছিটমহলবাসীদের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে নীলফামারীর ডিমলায় ভারতের ৪টি ছিটমহলে পরিদর্শন শেষে জানালেন  নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ডিমলা উপজেলার ৪টি ছিটমহল পরিদর্শন করে ছিটমহলবাসীদের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা তারা পাবেন। এ সময় ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম, খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন, টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন, গয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ভারতের মন্ত্রিসভায় স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন হওয়ায় ছিটমহলবাসীরা দ্রুত বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন চায় ছিটমহলবাসীরা। বড়খানকিবাড়ি খারিজায় বাসিন্দা যদুনাথ চন্দ্র রায় জানায়, ৬৮ বছরের বন্দী দশা থেকে আমরা মুক্তি পেতে যাচ্ছি। ছিটমহলবাসীদের  উভয় দেশের মধ্যে নাগরীকত্বে কোন কিছুই ছিল না। আমরা জমি বিক্রি করতে পারতাম না, ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য স্কুলে ভর্তি করতে পারতাম না। তালুক বড়খানকি খারিজার মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের সতœানদের আরো গোপন ঠিকানায় স্কুলে ভর্তি করতে হবে না। বড়খানকী খারিজা গীতালদহের মশিয়ার রহমান বলেন, উভয় দেশের সরকারের আন্তরিক মনোভাব ও ছিটমহলবাসীদের দুভোগ উপলক্ষি করতে পেয়ে সীমান্ত চুক্তি ভারতের মন্ত্রীসভায় অনুমোদন করা হয়েছে। নগর জিকাবাড়ির আকতারুজ্জামান বলেন,আমরা দ্রুত সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন চাই। তিনি বলেন ভারতের মন্ত্রীসভায় স্থল সীমান্ত চুক্তির সংবাদটি ছিটমহলবাসীদের আনন্দে আত্বহারা। দীর্ঘ ৬৭ বছরের বন্দীদশা থেকে তারা মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কুচবিহার রাজ্যের কোচ রাজার জমিদারির কিছু অংশ রাজ্যের বাইরের পঞ্চগড়ের বোদা, দেবীগঞ্জ, নীলফামারীর ডিমলা, লালমনিরহাটে পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও ভুরুঙ্গামারিতে অবস্থিত ছিল। ভারত ভাগের পর ওই আট থানা পূর্ব পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হয়। আর কুচবিহার একীভূত হয় পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে। ফলে ভারতের কিছু ভূখন্ড আসে বাংলাদেশের কাছে। আর বাংলাদেশের কিছু ভূখন্ড যায় ভারতে। এই ভূমিগুলোই হচ্ছে বর্তমানের ছিটমহল। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হলেও কোচবিহার ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। কোচবিহার ছিল রাজাশাসিত পৃথক রাজ্য। ১৯৪৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কোচবিহারের রাজা জগদ্বীপেন্দ্র নারায়ণ কোচবিহারকে ভারত রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার এক চুক্তিতে আবদ্ধ হন। এরপর ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি কোচবিহারকে পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ভারত স্বাধীন হলেও ছিটমহলের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় বিষয়টি ঝুলে থাকে। বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার অভ্যন্তরে ৪টি ছিটমহলের হেডকাউন্টিং জরিপে ১২৬টি পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবারের জনসংখ্যা ৫৩২ জন। এখানে পুরুষ ২৭২ ও মহিলা ২৬০ জন। খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ২৮ নম্বর ছিটমহল বড়খানকিবাড়ি পরিবারের সংখ্যা ২১ ও জনসংখ্যায় পুরুষ ৪৯, মহিলা ৪৮ সহ ৯৭ জন। গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ২৯ নম্বর ছিটমহল বড়খানকি খারিজা গিদালদহর পরিবারের সংখ্যা ৪৭। জনসংখ্যার মধ্যে পুরুষ ৯৪ জন, মহিলা ৯৬ জনসহ ১৯০ জন। গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৩০ নম্বর ছিটমহল বড়খানকী খারিজা গীতালদহে পরিবারের সংখ্যা ৯। জনসংখ্যায় পুরুষ ২১ ও মহিলা ১৮ সহ ৩৯ জন। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ৩১ নম্বর ছিটমহল নগর জিকাবাড়িতে পরিবারের সংখ্যা ৪৯ জন। জনসংখ্যায় পুরুষ ১০৮জন ও মহিলা ৯৮ জনসহ ২০৬ জন। নীলফামারীর জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন বলেন, চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ছিটমহলবাসীদের সার্বিক নিরাপত্তাসহ সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসকের ঘোষনায় শুক্রবার ডিমলার ছিটমহলবাসীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে আনন্দে উল্লাস করছেন তারা।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item