নীলফামারী জুড়ে মশার উপদ্রবে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ মশা তাড়াতে আগুনে পুড়ছে ঘরবাড়ি



প্রভাষক,আবু ফাত্তাহ্ কামাল (পাখি) ।স্টাফ রির্পোটার
॥  অপরিচ্ছন্ন নালা ও ময়লা-আবর্জনার কারণে নীলফামারী জেলা জুড়ে শহর বন্দর- গ্রামগঞ্জ ও হাটবাজারে চরমভাবে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যা ও রাত্রিকালে তো বটেই, দিনের বেলায়ও জনজীবন অতিষ্ঠ। এলাকাবাসী বলছেন, মশার এতই উৎপাত যে, কয়েল ও ¯েপ্র ব্যবহার  করেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। আবার গ্রামে ধুপ ধুনা দিয়ে  মশা তাড়াতে গিয়ে ঘটছে অগ্নিকান্ড। ফলে আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। মরছে গবাধী পশু। নিঃস্ব হচ্ছে অনেক পরিবার।
নীলফামারী শহরের বাবুপাড়া আব্দুল মজিদ বললেন জীবনে এতো মশার উপদ্রব দেখিনি। ইটাখোলার বটেরতল গ্রামের ইউনুছ আলী বললেন দিনে রাতে মশার এতো উপদ্রব আর সহ্য করা যায়না।  শুধু আব্দুল মজিদ বা ইউনুছ আলী নয় জেলার সকল মানুষের একই মন্তব্য শুনতে হয়েছে।

এদিকে শহর ছেড়ে গ্রামে গঞ্জেও মশার উপদ্রব রয়েছে। কৃষককুল মশার কামড় থেকে নিজেরা এবং গোয়াল ঘরে থাকা গবাধী পশুকে রক্ষার জন্য ধুপ-ধুনা ব্যবহার  করছে। ফলে অসাবধনার কারনে ঘটছে ঘরবাড়িতে অগ্নিকান্ড। সম্প্রতিকালে এ কারনেই  ডোমার জলঢাকা,কিশোরীগঞ্জ ও জেলা সদরে ছোট বড় প্রায় অর্ধশতাধিক  অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫টি গরু ছাগল ও শতশত হাঁস মুরগী মারা যায়। এমনকি এক বৃদ্ধারও মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি পুড়ে ছাই হয় অসংখ্য টিনের ও খড়ের ঘরবাড়ি,আসবাবপত্র ও ধান চাল নগদ অর্থ। অগ্নিকান্ডের এমন ঘটনায় জানা যায় মশার উপদ্রবে কয়েল জালিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন জেলা সদরের চওড়া-বড়গাছা ইউনিয়নের ছত্রছাল কাঞ্চনপাড়া গ্রামে ওমেনা বেওয়া(৭২) নামে এক বৃদ্ধা। গত ১২ মার্চ ওই কয়েলের থেকে অগ্নিকান্ডে উক্ত বৃদ্ধা আগুনে পুড়ে মারা যায়। এ ছাড়া ওই গ্রামের  ৫ পরিবারের ১৪টি টিনের ও খড়ের ঘর আসবাবপত্র নগদ অর্থ ভস্মিভুত হয়। এ ছাড়া তিনটি ছাগল ও অর্ধশতাধিক হাঁস মুরগী অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মারা যায়।  একই কারনে গত ২৭ মার্চ রাতে  জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের চিড়াভিজা গোলনা সর্দারপাড়া গ্রামে অগ্নিকান্ডে পিতাপুত্রের ৭টি ঘর পুড়ে ছাই ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে একটি গরু ও তিনটি ছাগলের মৃত্যু হয়। এ সময় আগুনের তাপে পিতা সমসের আলী(৫৫) ও পুত্র মেহেরুল ইসলাম(২৮) আহত হয়। তারা এখনো ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা রয়েছে। এ ছাড়া একই দিনে মশা তাড়ানোর কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে গিয়ে ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নে বেতগাড়া ধঞ্চনপুর  বাজারের ৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়েছে। ওই বাজারের হাজ্বী মার্কেটের উত্তমের টেইর্লাসের দোকান থেকে কয়েল থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটেছিল। এমন অনেক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
এ জেলার ৬ উপজেলা ৬০টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভা রয়েছে। এসব এলাকার আনাচে-কানাচে  রয়েছে অগনিত খালবিল ডোবা নালা এবং নর্দমা (ড্রেন)। কিন্তু উপজেলা বা পৌরসভার পক্ষে এসব নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না বললে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফলে এগুলো মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে। এতে দেখা যায় বাসা বাড়ি অফিস আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল ও ক্লিনিক বাদেও মশার উপদ্রপ রাস্তাঘাট থেকে খোলা মুক্ত মাঠেও ছড়িয়ে পড়েছে।মশা তাড়ানোর জন্য এ জেলার উপজেলা বা পৌরসভা গুলোতে ফগার ও ¯েপ্র মেশিন না থাকায় মশা নিধন কর্মসূচি নেয়া হয়না বলে জানা গেছে। পৌর নাগরিকদের অভিযোগ বাজেট বরাদ্দে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি অন্যতম কারণ। জেলার ডোমার,নীলফামারী,জলঢাকা ও সৈয়দপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বাজেটে মশা নিধনের ব্যয় ধরলেও তা কার্যকর হয়না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ফায়ার সার্ভিস নীলফামারী স্টেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, মশা তাড়ানোর ধুপধুনার কারনে অগ্নিকান্ড বেশী ঘটছে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে মানুষজনের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ জন্য  মশার উৎপত্তির কারণ ময়লা-আবর্জনা তথা অপরিচ্ছন্নতা। এগুলো দূর করতে সিভিক সেন্স বা নাগরিক সচেতনতাই অধিক কার্যকর। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট বা আশেপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব  সকলেরই।

পুরোনো সংবাদ

নিবিড়-অবলোকন 8272715949528953210

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item