ছোট গল্প- একুশের কথোপকথন

# আহমদুল হক সোয়েব #

কালো রঙের নেই ? মোহনীয় প্রশ্ন স্বর্গীয় দূতকে।
স্বর্গীয়দূতের সদা হাসি ছুঁয়ে যাওয়া স্বাগত সম্ভাষণ।-এগিয়ে দেয় নিবিড় কালো রঙের এক গোছা ফিতে।
মোহনীয় ঈষৎ ঊদ্বিগ্ন মেশানো আগ্রহ- এর চেয়ে চ্যাপ্টা হবে না।
স্বর্গীয়দূতের চকচকে চোখের তৎপরতা- শুধুমাত্র এই অল্প কয়েক সেমি আছে।

মালঞ্চের বিষ্ময় জড়ানো কন্ঠ- কালো কেন ? লাল রঙটাই তো খোঁপায় তোমায় বেশ মানায়।
মোহনীকে ভাললাগার রঙে সাজাবার উৎকন্ঠায় বিক্রেতার দৃষ্টি কাড়ার আহ্বান-লালটাই দিন তো।
মোহনীয় সদা প্রশান্ত আচরণটা হঠাৎই তীব্র ঝাঁঝালো জেদের উপমায় ঊম্মেষিত হয়। কালো রঙেরই আমি নেব। মোহনীয় অকারণ রাগান্বিত উপেক্ষা মালঞ্চের হৃদয়ে বৃষ্টির নাকি কালবোশেখী তোলপাড়- পথচারী অথবা আশে পাশের কালো বোঝার সে অন্ত-চোখের সাধ্যিকার ?- শুধু মোহনী ছাড়া।
তবুও মোহনী জেদীত্বে অনঢ়। কালো রঙেরই নেব।
ভালবাার সুদীর্ঘ বিশ্বাসের চৈতন্যে আঘাত করলে মানুষ যেমন হতভম্ভ,উত্তেজিত, উম্মাদ অথবা পাথর হয়ে যায়- মালঞ্চের তেমন কিছুই বোঝা গেল না।শুধু কি এক অভিমান মিশ্রিত সন্দেহ হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে- মোহনী কার ধ্যানের মগ্নতায়, চোখে রঙ লেগেছে বিপরী রঙের মেরুতে।
-লোভনীয় এ কোন অহংকারী রঙের আশ্রয়- বিশ্বাস মালঞ্চ ভাবতে থাকে- মোহনী কি অবজ্ঞায় ভুলে গ্যাছে- মিলন মধুর প্রহরের অকপট প্রতিশ্রুতি অবাধ্য হবো না-এই তোমাকে ছূঁয়ে বলছি।
মোহনীর প্রতারণার অভিমানে মালঞ্চ রাগে দুঃখে নাকি জেদে অন্য পথ ধরে হন হন করে হাঁটতে থাকে।
মোহনী হতভম্ভ। কিংকর্তব্য বিমূঢ়।অবশেষে মোহনী সব ফেলে মালঞ্চের পিছু নেয়।মালঞ্চ ক্ষোভে দৌড়াতে থাকে। ফিরে দেখে না পিছু। দৌড়ায়। দৌড়াতেই থাকে। মালঞ্চের পিছু মোহনী।পেছনে পড়ে থাকে ‘‘দু’’ শো বছরের সুনিপুন মেধাবী শোষনের অসভ্য কলংকিত ইতিহাস। পাকিস্তানের চব্বিশ বছরের রক্ত চোখের অমানবিক শাসন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর হত্যার জিজ্ঞাসা। জিয়াউর রহমানের মেধাবী বীরত্বে গাঁথা দেশাত্ববোধের পরিকল্পিত হত্যার প্রশ্ন।ওরা দৌড়ায়। মালঞ্চের পিছু মোহনী।
অবশেষে হাঁপাতে হাঁপাতে মালঞ্চ এসে দাঁড়ায়- হরতাল, বোমাবাজী, দূর্নীতিতে ছাওয়া, দেশাত্ববোধহীনতার সন্ত্রাস ছড়ানো উদ্যানের দুর্গন্ধময় বাতাসে। বসতেইচ্ছে করে না। নিকণও। পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে মোহনী। মোহনী দু’হাতে সজোরে জড়িয়ে ধওে মালঞ্চকে। মাথায় হাত বুলায়। নিঃশব্দে গন্ড বেয়ে জল ঝরে। -আমি তোমাকে নিখাঁদ ভালবাসি মালঞ্চ। আর তার চেয়ে বেশি ভালবাসি- যারা বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে প্রিয়তম বর্ণমালাকে স্বাধীনতা দিয়েছে। যারা বিশ্বের মানচিত্রে এঁকেছে মোদের গর্বিত জাতীয়তাবোধ। আমি তো তোমায় শুধুমাত্র পরখ করছিলাম- তোমার আমার ভালো লাগার প্রতিশ্রুতিকে।
মালঞ্চের কন্ঠে, চোখে অপরাধের চিহ্ন লক্ষিটি ক্ষমা কর। ভুলেই গিয়েছিলাম, কাল ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’’। -আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী। গেয়ে উঠে ওরা দুজনেই।আকাশে বাতাসে, মর্ত্য,ে পাতালে ছড়িয়ে পড়ে ‘‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী।’’
ওরা হাত ধরা ধরি করে এগিয়ে যায় স্বর্গদূতের আলোকে শান্তির বিকিরনে।মোহনীয় বিরক্তি মেশানো কন্ঠ লাল ফিতেটা কেন আবার ? মালঞ্চের হাস্যোজ্জল উত্তর- এ হচ্ছে শহীদের বীরত্বের আনন্দ প্রতীক।
মোহনীর প্রশ্ন- আর সবুজ নিয়েছ কেন ?মালঞ্চের উত্তর এ হচ্ছে শহীদের ত্যাগের আলোকে এ প্রজন্মের তারণ্যের পথ নির্দেশক।
মোহনী এক অন্য বিস্ময় চোখে মালঞ্চের বুকে মাথাটা এলিয়ে দেয়।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 4639645544509411845

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item