নীলফামারীর জলঢাকায় পাল সম্রাট ধর্মপালের নির্দেশনের সন্ধান

তাহমিন হক বরী॥
  নীলফামারীতে এই প্রথম  প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শনের সন্ধান পেলেন প্রত্নতত্ত্ব সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গড় ধর্মপাল ইউনিয়নের পূর্ব খেরকাটি নামক স্থানে এর সন্ধান পাওয়া গেছে। গত তিনদিন থেকে  খনন কাজ শুরু করার পর সোমবার পাল সম্রাট ধর্মপালের প্রত্নতত্ত্বের  সন্ধান মেলে। এছাড়াও খনন এলাকা থেকে দুই শত গজ দূরে সবুজপাড়া নামক স্থানে আরেকটি প্রত্নতত্ত্বের বের সন্ধান উদঘাটক করা হয়। যার খনন কাজ আর কিছুদিনের মধ্যে শুরু করা হবে।প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনের সন্ধান মেলায় সেখানে নেমে আসে হাজারো মানুষের ঢল। উৎসুক জনতা এক নজর দেখার জন্য অনেকেই দুর দুরান্ত থেকে সেখানে ভিড় করছে।
এর আগে এলাকাবাসীর আবেদনে স্থানটিতে ১৯৯০ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খনন কাজ পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু তারা সফলতা পায়নি। এবার বিষয়টি হাতে নেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি। তার মন্ত্রনালয়ের পক্ষে এটির খনন কাজ শুরু করায় এটির সফলতা প্রকাশ পেলো ।
জানা যায় পাল সম্রাট ধর্মপাল ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা অঞ্চলের পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক। তিনি ছিলেন পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের পুত্র ও উত্তরাধিকারী। তিনি পৈত্রিক রাজত্বের সীমানা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেন এবং পাল সাম্রাজ্যকে উত্তর ও পূর্ব ভারতের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেন। ধর্মপালের সুদীর্ঘ রাজত্বকালের (আনু. ৭৮১-৮২১ খ্রি.) সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ত্রিপীয় যুদ্ধ। উত্তর ভারতের মধ্যদেশে আধিপত্য বিস্তারের জন্য দাণিাত্যের রাষ্ট্রকূট এবং মালব ও রাজস্থানের
গুর্জর-প্রতীহারদের সঙ্গে বাংলার পালগণ দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ললিতাদিত্য ও যশোবর্মণের বিজয়াভিযানের পর উত্তর ভারতের মধ্যমণি কনৌজে শূণ্যস্থান পূরণের জন্য উলিখিত তিন শক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
ধর্মপাল উত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে হস্তপে করার মতো যথেষ্ট শক্তির অধিকারী বলে নিজেকে মনে করেন এবং এেেত্র তিনি কিছু সাফল্যও অর্জন করেন। পাল রাজা ধর্মপাল এবং প্রতীহার রাজা বৎসরাজের মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে ৭৯০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ত্রিপীয় যুদ্ধের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এতে প্রথমোক্তজনের পরাজয় ঘটে এবং পরে উভয়েরই অভিন্ন শক্র দাণিাত্য থেকে আগত রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুব ধারা বর্ষের হাতে দুজনেই পরাজিত হন। সে সময় থেকে নীলফামারীর ওই স্থানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। ধীরে সেখানকার অবকাঠামো গুলো মাটির নিচে তলিয়ে যেতে থাকে। তার নাম অনুসারে এলাকাটির নাম গড় ধর্মপাল হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়। এদিকে চলমান খনন কাজে  ধর্মপাল গড়ের দুর্গ প্রাচীরগুলো আবিস্কার করে  পুনাঙ্গ রূপ দিতে যাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়টি।
 সোমবার স্থানটিতে পরিদর্শন করেন নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন  রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা, রাজশাহী বিভাগের আফজাল হোসেন, রাজশাহী বিভাগের আলোকচিত্রকর আবুল কালাম আজাদ, লোকমান হোসেন প্রমুখ।
খননকাজে নিয়োজিত বগুড়ার মহাস্থানগরের দলনেতা মুজিবুর রহমান বলেন কেবলি খনন কাজের সফলা উঠে আসতে শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে পাল সম্রাট ধর্মপালের বিশাল এলাকা জুড়ে প্রতœতত্ত্ব আর্বিস্কার করা সম্ভব হবে। এটি পূনাঙ্গরূপে সফলা পেলে ধর্মপাল এলাকাটি আলোকিত হয়ে উঠবে। কাজ আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3513849901612958833

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item